Book Name:Shetan Ki Insan Se Dushmani

শুধুমাত্র আগুন দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে । (মুসলিম, কিতাবুয যুহুদ ওয়ার রকায়িক, ১২২১ পৃষ্ঠা, হাদীস-৭৪৯৫) যখন আল্লাহ পাক তাকে হযরত আদম عَلَیْہِ السَّلَام কে সিজদা করার আদেশ দিলেন তখন সে বলতে লাগলো: হে আল্লাহ! তুমি একে আমার উপর ফযিলত দিয়ে দিয়েছো, অথচ আমি তাঁর থেকে উত্তম, তুমি আমাকে আগুন দ্বারা এবং তাঁকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছো, আমি আগুন হয়ে এই মাটির তৈরি মানুষকে সিজদা করবো? তখন দয়ালূ রব ইরশাদ করলেন: আমি যা ইচ্ছা তাই করি। সকল ফেরেশতরা হযরত আদম عَلَیْہِ السَّلَام কে সিজদা করলো কিন্তু অভিশপ্ত শয়তান অহঙ্কারের কারণে সিজদা করলো না, তখন ফেরেশতারা আল্লাহ পাকের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার জন্য আরেকটি সিজদা শোকরানা স্বরূপ করলো, কিন্তু শয়তান তাদের থেকে দূরে দাঁড়িয়ে রইলো এবং তার এই কাজের জন্য কোন অনুশোচনা হলো না তখন তাকে অহঙ্কার করার কারণে আল্লাহ পাক অনন্তকালের জন্য আপন দরবার থেকে অভিশপ্ত ঘোষনা করে বের করে দিলেন, শুকরের ন্যায় ঝুলন্ত মুখ, মাথা উটের মাথার ন্যায়, বুক বড় উটের কুঁজের ন্যায়, চেহারা এমন যেমনটি বানরের চেহারা, চোখ খাড়া, নাক নাপিতের খুরের ন্যায় খোলা, ঠোঁট ষাঁড়ের ঠোঁটের ন্যায় ঝুলন্ত, দাঁত শুকরের ন্যায় বাইরে বের করা এবং দাড়িতে শুধুমাত্র সাতটি চুল, এই আকৃতিতে তাকে জান্নাত থেকে নীচে ফেলে দেয়া হলো এবং কিয়ামত পর্যন্ত অভিশাপের অধিকারী হয় গেলো আর তখন থেকে এই ইবলিশ, অভিশপ্ত শয়তান নামে প্রসিদ্ধ হয়ে গেলো। (মুকাশাফাতুল কুলুব, ৭৯ পৃষ্ঠা)

 

অহঙ্কারের ধ্বংসলীলা

          প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এখনই আমরা শয়তান সম্পর্কে শুনলাম যে, কতবড় ইবাদত গুজার, জ্ঞানী ছিলো কিন্তু তাকে একটি গুনাহের কারণে আল্লাহর দরবার থেকে অভিশপ্ত ঘোষনা করে দিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে এবং সেই গুনাহ ছিলো অহঙ্কার। * অহঙ্কার শয়তানের হাতিয়ার গুলোর মধ্যে একটি হাতিয়ার, যার মাধ্যমে সে মানুষের সাথে নিজের শত্রুতা প্রকাশ করে এবং মানুষকে পথভ্রষ্ট করে তাদেরকে আল্লাহ পাকের অসন্তুষ্টির অতল গহ্বরে ঠেলে দেয়, মনে রাখবেন! * অহঙ্কার ধ্বংসকারী আমল, * অহঙ্কারী আল্লাহ পাকের অপছন্দনীয় বান্দা, * অহঙ্কারী দূর্ভাগাদের অন্তরে আল্লাহ পাক মোহর লাগিয়ে দেয়, * অহঙ্কারী কোরআনী আয়াতে চিন্তা ভাবনা করা এবং তা থেকে শিক্ষা ও নসীহত অর্জন করা থেকে বঞ্চিত হয়ে যায় * এবং সেই দূর্ভাগাকে অপদস্ত করে দোযখে প্রবেশ করানো হবে। * অহঙ্কারীরা নেক লোকদের বরং বুযুর্গদের সাহচর্য থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয়। আসুন! অহঙ্কারের সংজ্ঞা শ্রবণ করে নিই:

 

অহঙ্কারের সংজ্ঞা

          নিজেকে উত্তম, অপরকে নিকৃষ্ট মনে করার নামই হলো অহঙ্কার।

          প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: অহঙ্কার সত্যের বিরুধীতা এবং মানুষকে নিকৃষ্ট জানার নাম। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, ৬১ পৃষ্ঠা, হাদীস-৯১)

          ইমাম রাগিব ইসফাহানী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ লিখেন: অহঙ্কার হলো, মানুষ নিজেকে অন্যের চেয়ে উত্তম মনে করা। (আল মুফরাদাত লির রাগিব, ৬৯৭ পৃষ্ঠা)

          যার অন্তরে অহঙ্কার থাকে তাকে অহঙ্কারী” বলা হয়।