Book Name:Dil Ki Sakhti
পাকের ভয়ে বান্দার লোম দাঁড়িয়ে যায় তখন তার গুনাহ এভাবেই ঝরে পড়ে, যেভাবে শুকনো গাছ থেকে পাতা ঝরে যায়। (শুয়াবুল ঈমান, আল হাদী আশার মিন শুয়াবিল ঈমান, ১/৪৯১, হাদিস: ৮০৩)
صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب! صَلَّی اللهُ عَلٰی مُحَمَّد
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! অন্তরে নম্রতা সৃষ্টির একটি পদ্ধতি হলো, মন্দ ব্যক্তির সাহচর্য থেকে দূরে থাকা এবং নেককার ও পরহেযগার ব্যক্তির সাহচর্য অবলম্বন করা। প্রসিদ্ধ মুফাসসির, হাকিমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ বলেন: “যেমন লোহা নরম হয়ে সরঞ্জামাদি, সোনা নরম হয়ে অলঙ্কার, মাটি নরম হয়ে ক্ষেত-খামার এবং আটা নরম হয়ে রুটি ইত্যাদি তৈরী হয়, ঠিক তেমনই মানুষের মন নরম হয়ে ওলী, সূফী, আরিফ ইত্যাদি হয়ে থাকে। অন্তরের নম্রতা আল্লাহ পাকের অনেক বড় নেয়ামত, অন্তরের এই নম্রতা বুযুর্গুদের সাহচর্য এবং তাঁদের পবিত্র বাক্যলাপ দ্বারা নসিব হয়ে থাকে।” (মিরআতুল মানাজীহ, ৭/২) এবং নেককার লোকদের সাহচর্য অবলম্বন করার আদেশ তো আল্লাহ পাক স্বয়ং কুরআনে পাকের ১১তম পারায় সূরা তাওবার ১১৯ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন:
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَ کُوْنُوْا مَعَ الصّٰدِقِیْنَ
(পারা ১১, তাওবা, আয়াত ১১৯) কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো।
তাফসীরে “সীরাতুল জিনান” এর ৪র্থ খন্ডের ২৫৮ নং পৃষ্ঠায় রয়েছে, এই আয়াত দ্বারা নেককার লোকদের সংস্পর্শে বসারও প্রমাণ পাওয়া যায়, কেননা তাঁদের সাথে থাকার একটি পন্থা হলো তাঁদের সঙ্গ অবলম্বন করা এবং তাঁদের সঙ্গ অবলম্বন করার একটি প্রভাব এরূপ হয় যে, তাঁদের আচরণ ও চরিত্র এবং উত্তম আমল সমূহ দেখে নিজেরও গুনাহ থেকে বাঁচার এবং নেক কাজ করার তাওফিক অর্জিত হয় আর একটি প্রভাব এরূপ হয় যে, অন্তরের কঠোরতা নিঃশেষ হয়ে যায় এবং তাতে কোমলতা ও নম্রতা অনুভূত হয়ে থাকে।
صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب! صَلَّی اللهُ عَلٰی مُحَمَّد
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! অন্তরে কোমলতা সৃষ্টির জন্যে আরও একটি পদ্ধতি হলো নিজের মৃত্যুকে অধিকহারে স্মরণ করা। হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দিকা رَضِیَ اللهُ عَنْہَا এর দরবারে এক মহিলা অন্তরের কঠোরতার অভিযোগ নিয়ে উপস্থিত হলে তখন তিনি এটার এই চিকিৎসা বর্ণনা করেন: “মৃত্যুকে অধিকহারে স্মরণ করো, তোমার অন্তরে কোমলতা সৃষ্টি হবে।” সে কিছুদিন এরূপ করলো অতঃপর যখন তার অন্তরে কোমলতা সৃষ্টি হয়ে গেলো তখন উম্মুল মুমিনিন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়েশা সিদ্দিকা رَضِیَ اللهُ عَنْہَا এর দরবারে উপস্থিত হলো এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলো। (ইত্তিহাফুস সা’আদাতিল মুত্তাকীন, ১৪/২৪)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদের নিজেদের মৃত্যুকে কখনো ভুলে থাকা উচিৎ নয় এবং দুনিয়ার ভালোবাসার পিছু ছেড়ে জীবনের বাকি দিনগুলো আল্লাহ পাকের বেশি বেশি ইবাদত, আখিরাতের ভাবনা এবং মৃত্যুকে স্মরণ রাখার পাশাপাশি এর প্রস্তুতি নেয়া উচিত।