Qayamat Ke Din Ke Gawah

Book Name:Qayamat Ke Din Ke Gawah

          হায়! আফসোস! একটু চিন্তা করুন! কীরূপ ভীতিকর অবস্থা হবে যে কিয়ামতের দিন আমাদের অঙ্গসমূহ আমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। পা বলবে; মাওলা! এই ব্যক্তি অমুক দিন, অমুক সময়, অমুক গুনাহের স্থানে গিয়েছিলো। হাত বলবে; মাওলা, এই ব্যক্তি আমাকে হারাম উপর্জন করা, হারাম আহার করা ও হারাম কাজে ব্যবহার করেছে। চোখ বলবে; মাওলা, এই ব্যক্তি আমার মাধ্যমে কুদৃষ্টি দিতো, সিনেমা নাটক দেখতো। কান সাক্ষ্য দেবে; মাওলা, এ আমার মাধ্যমে গান-বাজনা শুনতো, অশ্লীল কথা শুনে মজা পেতো। মুখ বলবে; মাওলা, এ আমার মাধ্যমে গীবত করতো, মিথ্যা বলতো, চোগলখুরী করতো, লানত দিতো। হায়! ঐ সময় যখন আমাদের শরীরের অঙ্গগুলো আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, তখন আমরা নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবো? নিজের সাফাই দেওয়ার জন্য আমরা কোন অজুহাত পেশ করবো?

 

          হায়! হে আশিকানে রাসূল! এই জমীন, এই দিন ও রাত, আমল লেখক ফেরেশতা, এমনকি আমাদের অঙ্গসমূহ, আমাদের চোখ, মুখ, কান, হাত, পা- সব কিছুই আমাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে। তো বলুন নাজাতের কী উপায় হবে? কোনো অজুহাত কি আমাদের কাছে অবশিষ্ট থাকবে? না থাকবে না। কিন্তু আফসোস! আমরা বুঝতে চাইছি না, ভয় করছি না, আখিরাতকে ভুলে যাচ্ছি। দুনিয়ার এ নশ্বর জীবন- এখানকার ক্ষণিক আরাম-আয়েশের জন্য গর্ব করছি। হায়! মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন। আমরা তারপরও গুনাহ থেকে বিরত হচ্ছি না।

 

বড় মুর্খ কে.....?

          একবার খলিফা আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান হযরত মনসুর বিন আম্মার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ কে বললেন- হে মনসুর! একটি প্রশ্ন যার জন্য আমি আপনাকে এক বছর সুযোগ দিচ্ছি, এর উত্তর খুঁজে দেবেন। প্রশ্ন হলো এই যে- সবচেয়ে বড় জ্ঞানী কে এবং সবচেয়ে বড় মুর্খ কে? মনসুর বিন আম্মার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ প্রশ্ন শুনে উত্তর খুঁজতে মহল থেকে বাইরে এলেন। খোলা আকাশের নিচে আসা মাত্র আবার তৎক্ষণাৎ ফিরে গেলেন। খলিফা আব্দুল মালিক বিন বিন মারওয়ান যখন তাকে দেখলেন বললেন: হে মনসূর! উত্তর কি পেয়ে গেছেন? বললেন: হ্যাঁ, সবচেয়ে বড় জ্ঞানী হলো সে যে নেকী করেও ভীত থাকে এবং সবচেয়ে বড় মুর্খ সে যে গুনাহও করে,

আবার মহান আল্লাহর আযাবকে ভয়ই করে না।

          এটা শুনে আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান কান্না করতে লাগলো, তারপর বললো: হে মনসূর! আল্লাহ পাকের শপথ! আপনি ঠিক বলেছেন। আমাকে অন্তরের শিফা অর্থাৎ কুরআনে পাকের কোনো আয়াত তিলাওয়াত করে শুনান! মনসূর বিন আম্মার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ পারা ৩, সূরা আলে ইমরানের এই আয়াত পাঠ করলেন:

یَوْمَ تَجِدُ کُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَیْرٍ مُّحْضَرًا ۚۖۛ وَّ مَا عَمِلَتْ مِنْ سُوْٓءٍ ۚۛ

(পারা ৩, আলে ইমরান, আয়াত ৩০)                       কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: যে দিন প্রত্যেকে, যে ভাল কাজ করেছে তা বিদ্যমান পাবে এবং যে কোনো মন্দ কাজ করেছে তাও বিদ্যমান পাবে।

 

          এটা শুনে খলিফা আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান বেহুঁশ হয়ে গেলেন। যখন হুঁশ এলো তখন বললেন: হে মনসূর! আল্লাহ পাকের ফরমান:

وَ یُحَذِّرُکُمُ اللّٰہُ نَفْسَہٗ ؕ