Book Name:Khai Walon Ka Waqia
না। ফলে প্রথমে কনুই পর্যন্ত এবং তারপর কাঁধ পর্যন্ত হাত কেটেছে। কিছু মানুষ আমার কষ্ট শুরু হওয়ার কারণ জানতে চাইলে, আমি তাদের মাছের ঘটনাটি বললাম। তারা বলল: যদি তুমি প্রথমে জেলের নিকট গিয়ে কাছে ক্ষমা চাইতে এবং তাকে সন্তুষ্ট করতে, তাহলে হয়তো তোমাকে এই অঙ্গগুলি কাটাতে হতো না। এখনও সময় আছে, কষ্ট পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আগে ওই ব্যক্তির কাছে যাও এবং তাকে সন্তুষ্ট করো। আমি খুব কষ্ট করে জেলেকে খুঁজে বের করলাম এবং ক্ষমা চাওয়ার জন্য তার পায়ের কাছে পড়ে গেলাম। সে চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো: তুমি কে? আমি বললাম: আমি সেই ব্যক্তি, যে তোমার কাছ থেকে মাছ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর আমি তাকে পুরো ঘটনা বললাম এবং কাটা হাত দেখালাম, তখন সে কাঁদতে লাগল এবং বলল: আমার ভাই! আমি তোমাকে ক্ষমা করলাম। আমি তাকে সাক্ষী বানিয়ে ভবিষ্যতে কাউকে কষ্ট দেওয়ার বিষয়ে তাওবা করে নিলাম।
(আল কাবায়ির, পৃষ্ঠা ৮০)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! একটি খুবই বিপজ্জনক বাতেনী রোগ হল: ক্ষমতার নেশা। আমাদের এই রোগকে নিজেদের মধ্যে থেকে অবশ্যই নির্মূল করতে হবে, কারণ সাধারণত অত্যাচার সেই করে, যার মধ্যে শক্তি ও ক্ষমতার নেশা থাকে।
এটাও মনে রাখুন! শক্তি ও ক্ষমতার নেশায় সামর্থ্য থাকা জরুরি নয়, অনেক সময় সামর্থ্যই নেই, কিন্তু মানুষ নিজেদের ধারনায় নিজেকে সামর্থ্যবান বলে মনে করে।
এটিই মূল বিষয়, যে ব্যক্তি নিজের মধ্যে থেকে শক্তি ও ক্ষমতার এই নেশা শেষ করে নিবে, আমি আমি করবে না, নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করে নিবে অথবা এভাবে বলা যায় যে, নিজের ভেতরের ফেরাউনকে হত্যা করে নিবে, তবে আসলেই সে ব্যক্তি অত্যাচার থেকে বাঁচতে পারবে। সমাজে লক্ষ্য করুন! যে ব্যক্তি নম্র হয়, সে কখনও অন্যদের কষ্ট দেয় না, যদি ভুলবশত কাউকে কিছু বলেও ফেলে, দ্রুত ক্ষমা চাইতে চলে আসে। কিন্তু যে নম্র নয়, যে নিজেকে কিছু মনে করে, সে অল্পতেই রেগে যায়।
এজন্য আমাদের নিজেদের মধ্যের ফেরাউনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, নম্রতা অবলম্বন করতে হবে। হযরত সুলাইমান عَلَیْہِ السَّلَام আল্লাহ পাকের নবী, তাঁর একটি প্রসিদ্ধ দরবারী পাখি আছে: হুদহুদ। একবার হুদহুদ হযরত সুলাইমান عَلَیْہِ السَّلَام এর অনুমতি ছাড়াই কোথাও চলে যায়, এই কারণে হযরত সুলাইমান عَلَیْہِ السَّلَام কঠোরভাবে অসন্তুষ্ট হলেন এবং বলেন: হুদহুদ ফিরে আসলে আমি তাকে শাস্তি দিবো। যখন হুদহুদ ফিরে এলো এবং দেখলো যে, হযরত সুলাইমান عَلَیْہِ السَّلَام রাগান্বিত হয়ে আছেন, তখন সে নম্রতা প্রদর্শন করে, তার পাখাগুলো মাটিতে হেঁচড়িয়ে উপস্থিত হয় এবং সুযোগ বুঝে আদবের সীমায় থেকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ পাকের আদালতে উপস্থিতির কথা আলোচনা করে। তখন কিয়ামতের কথা শুনে হযরত সুলাইমান عَلَیْہِ السَّلَام কেঁপে উঠলেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন। (তাফসীরে খাযিন, পারা ১৯, সূরা নামল, ২১ নং আয়াতের পাদটীকা, ৩/৩৪২)
আল্লাহ পাক আমাদেরও খোদাভীতি নসীব করো, আহা! আমরা যেন নম্রতার প্রতিচ্ছবি হতে পারি। اٰمین بِجاہِ خاتَمِْالنَّبِیّٖن صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم