Jannat Ke Khareedar

Book Name:Jannat Ke Khareedar

এব্যাপারে একটি  ঘটনা খুবই প্রসিদ্ধ রয়েছে। যখন সাহাবায়ে কিরাম عَلَیْهِمُ السَّلَام  হিজরত করে মদীনায়ে পাক আসে তখন এখানে পানির স্বল্পতার সম্মুখিন হলেন, তখন মদীনায়ে পাকে একটি কুপ ছিলো, যাকে বীরে রূমা বলা হতো, সেই কুপের মালিক পানি বিক্রি করতো, অতএব প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এই জামানত দিলেন যে, এই কুপকে মুসলমানের জন্য ওয়াকফ করে দিলে তবে এর বিনিময়ে জান্নাতী ঝর্ণা প্রদান করা হবে। এই সংবাদ যখন হযরত উসমানে গণি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ পর্যন্ত পৌঁছলো  তখন তিনি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ সেই কুপটি কিনলেন এবং আল্লাহর পথে ওয়াকফ করে দিলেন।

(মু’জামে কবীর, খন্ড:, ৩১৬ পৃষ্ঠা, হাদীস ১২১২)

 

        হযরত আব্দুল হক মুহাদ্দীসে দেহলভী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ লিখেন: এই কুপটি একজন অমুসলিমের ছিলো, হযরত উসমানে গণি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ তার থেকে ১২ হাজার দিরহামের (অর্থাৎ রূপ্য মুদ্রা) বিনিময়ে  অর্ধেক কুপ কিনে নিলেন, এখন যেহেতু এই কুফের অর্ধেক অংশ ওয়াকফ হয়ে গিয়েছিলো, অতএব কারো পানি কেনার প্রয়োজন হতো না, তাই সেই অমুসলিম লোকটির তা দ্বারা লাভবান হওয়ার দুরহ হয়ে গেলো, অতএব সে কুপের অবশিষ্ট অংশও তাঁরই নিকট ৮ হাজার দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিলো(জাযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব, ১৪২ পৃষ্ঠা) অর্থাৎ হযরত উসমানে গণি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ মোট ২০ হাজার দিরহামের বিনিময়ে এই কুপটি কিনে ওয়াকফ করে দিলেন এবং জান্নাতের অধিকারী হয়ে গেলেন।

 

হে আল্লাহ! উসমানের জন্য জান্নাত আবশ্যক করে দাও

        প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এই মুবারক কুপের শান ও মহত্বের প্রতি লাখো সালাম যে, এই মুবারক কুপ থেকে আল্লাহ পাকের প্রিয় ও সর্বশেষ নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর পানি পান করাও প্রমাণিত। বর্ণিত আছে: একবার রাসূলে পাক صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এদিক দিয়ে যাচ্ছিলেন, আরয করা হলো:   ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! এটি হলো সেই কুপ, যা হযরত উসমানে গণি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ কিনে সদকা করেছিলেন। একথা শুনে প্রিয় নবী, হুযুর পুরনূর صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم দোয়া প্রার্থনা করলেন: হে আল্লা হ পাক! উসমানের জন্য জান্নাত আবশ্যক করে দাও। অতঃপর তিনি صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সেই কুপের  পানি পান করলেন এবং ইরশাদ করলেন: এই উপত্যকায় অচিরেই অনেক ঝর্ণা হবে, যা খুবই মিষ্ট হবে কিন্তু বীরে মুযনী (অর্থাৎ বীরে রূমা) এসবগুলোর চেয়ে মিষ্ট হবে। (সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ৭/২২৭)

 

        প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এই বর্ণনা থেকে এটাও জানা গেলো যে, মুসলমানদের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমানে গণি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ মুসলমানদের অত্যধিক কল্যাণকামী ছিলেন, তিনি অভাবের সময় আপন মুসলমান ভাইদের জন্য পানির কুপ কিনে ওয়াকফ করে দেন।

 

        আহ! হযরত উসমানে গণি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ এর উসিলায় আমরাও যেনো কল্যাণকামী হয়ে যাই *  ক্ষুধার্তদের খাবার খাওয়াই * পিপাসার্তদের পানি পান করাই * শুষ্ক এলাকা যেখানে পানির স্বল্পতা রয়েছে, সেখানে পানির ব্যবস্থা করে দিই * পেরেশানগ্রস্থদের কাজে আসি * যে বেচারা দুঃখ কষ্টে ঘিরে আছে, তাদের সাথে দুঃখ ভাগাভাগি করি * অসহায়দের সহায় হই, মোটকথা; আমরা মুসলমানদের কাজে আসা, তাদের কল্যাণকামী এবং যতটুকু সম্ভব হয় অপরকে উপকারকারী হয়ে যাই।