Sakhawat e Mustafa

Book Name:Sakhawat e Mustafa

(আবু দাউদ, কিতাবুল খারাজ ওয়াল ফাই ওয়াল ইমারাত, ৩/২৩০-২৩২ পৃ:, হাদীস: ৩০৫৫)

 

          প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আপনারা শুনলেন তো আমাদের প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কি পরিমাণ উদারতিনি দুনিয়ার সম্পদ নিজের কাছে রাখাটা পছন্দ করতেন না, বরং যতক্ষণ পর্যন্ত লোকদের মাঝে তা বন্টন করে দিতেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত শান্ত হতেন নানিজের কোন বস্তুর প্রয়োজন থাকা সত্তেও গরিব, মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতেন এবং ভিক্ষুককে এত অধিক দান করতেন যে, তার পুনরায় ভিক্ষা করার প্রয়োজন পড়তো নাকিন্তু আফসোস! শতকোটি আফসোস! আমাদের অবস্থা এই যে, দুনিয়ার ভালোবাসা অন্তর থেকে কম হওয়ার নামও নেয় না এবং সব সময় দুনিয়ার নিয়ামত ও আরাম – আয়েশ বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা থাকে

          হযরত মাজমা’ আনসারী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এক বুযুর্গের ব্যাপারে বলেন যে, তিনি বলেছেন: আল্লাহ পাক আমাকে দুনিয়ার (আরাম আয়েশ) থেকে বাঁচিয়ে নেয়ার দয়া, এই (অর্থাৎ দুনিয়ার) বিলাসিতার (যেমন মাল ও দৌলত ইত্যাদির) আকৃতিতে অর্জিত নিয়ামত থেকে উত্তমকেননা আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় হাবীব صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর জন্য দুনিয়াকে পছন্দ করেননি, এজন্য আমার সেই নিয়ামত যা আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর জন্য পছন্দ করেছেন তা ঐসব নিয়ামতের চেয়ে বেশি প্রিয়, যা তিনি তাঁর প্রিয় নবী (صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) এর অপছন্দ করেছেন। (শুয়াবুল ঈমান, ৪/১১৭ পৃ:, হাদীস: ৪৪৮৯) মনে রাখবেন! দুনিয়ার মাল ও দৌলতের আধিক্যতা ও সেটার আরাম আয়েশ অবশ্যই নিয়ামত কিন্তু এসব থেকে বেঁচে থাকাটা আরো বড় নিয়ামত। (নেকীর দাওয়াত, ৩৫ পৃ:)

 

দুনিয়া হলো মিষ্টি সবুজ শ্যামল

          রাসূলে আকরাম صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বলেন: দুনিয়া হলো মিষ্টি সবুজ শ্যামল, যে এটাতে হালাল পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে আর সঠিক জায়গায় তা ব্যয় করে, আল্লাহ পাক তাকে সাওয়াব দান করবেন আর তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং যে এখানে হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে আর সেগুলো ভুল জায়গায় ব্যয় করে, আল্লাহ পাক তাকে دارُ الْھَوَان (অর্থাৎ অপমানের ঘরে) প্রবেশ করাবেন

(শুয়াবুল ঈমান, ৪/৩৯৬ পৃ:, হাদীস: ৫৫২৭)

 

          হযরত আল্লামা আব্দুর রউফ মুনাভী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ উক্ত হাদীসে পাকের ব্যাখ্যায় ফয়যুল কদীরে লিখেন: প্রতীয়মান হলো দুনিয়া স্বয়ং নিজে মন্দ নয়, যেহেতু এটা আখিরাতে শস্যক্ষেত, তাই যে ব্যক্তি শরীয়তের অনুমতিক্রমে দুনিয়ার কোন জিনিস অর্জন করে, তো সেই জিনিসটি আখিরাতে তাকে সাহায্য করবে(ফয়যুল কদীর, ৩/৭২৮ পৃ:, হাদীসের ব্যাখ্যা: ৪২৭৩) আমাদেরও উচিত প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুনিয়ার পেছনে না দৌড়ানো এবং হারাম পন্থা অবলম্বন করে মাল ও দৌলত জমা করার পরিবর্তে হালাল রিযিক অন্বেষণ করার মানসিকতা ও সাধ্যমতো দান-সদকাও করতে থাকা, নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশি ও অন্যান্য গরীবদেরকে আর্থিক সহযোগিতা করামূলত বাস্তবতা হলো, যে ব্যক্তি কাউকে সাহায্য করে আল্লাহ পাকও তাকে সাহায্য করেন এবং আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার ফলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়, কমে না, সদকার ফযিলত ও বরকতের ব্যাপারে রাসূলে করীম صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বলেন: সদকা সম্পদ কমায় না