Book Name:Hadees e Qudsi Aur Shan e Ghous e Azam
বুখারী শরীফে একটি হাদীসে ক্বুদসী আছে। হাদীসে ক্বুদসী ঐ হাদীস শরীফকে বলা হয়- যেখানে আল্লাহর বাণী প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ‘র জবানিতে বর্ণিত হয়েছে। অন্যভাবে বললে - সাধারণ হাদীসে প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ‘র বাণী থাকে আর সাহাবায়ে কিরাম হলেন বর্ণনাকারী (অর্থাৎ শুনে পরবর্তীতে অন্যের কাছে বর্ণনা করেন) । হাদীসে ক্বুদসীতে বাণী হলো আল্লাহর আর রাসূলে পাক صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم হলেন বর্ণনাকারী । আসুন, বুখারী শরীফের সেই হাদীসে ক্বুদসী শুনি-
হযরত আবু হুরাইরা رَضِیَ اللهُ عَنْہُ থেকে বর্ণিত- আল্লাহর প্রিয় নবী, মক্কী মাদানী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন, আল্লাহ পাক বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওয়ালীর সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা করি। বান্দা যে সকল উপায়ে আমার নৈকট্য অর্জন করে, তার মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় হলো ফরয (যেমন- নামায, রোযা, হজ, যাকাত ইত্যাদি)। আর আমার বান্দা নফলের মাধ্যমে আমার নৈকট্য অর্জন করতে করতে এমন অবস্থায় পৌঁছে যায় যে আমি তাকে ভালবাসতে শুরু করি। তারপর যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন তার কান হয়ে যাই- যা দিয়ে সে শোনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই- যা দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। তার পা হয়ে যাই, যা দিয়ে সে হাঁটে। যদি সে আমার কাছে প্রার্থনা করে , আমি তাকে দান করি। যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায় আমি তাকে আশ্রয় দিই।
(বুখারী, কিতাবুর রিক্বাক্ব, পৃষ্ঠা - ১৫৯৭, হাদীস ৬৫০২)
প্রসিদ্ধ মুফাসসীরে কুরআন, হাকীমুল উম্মত, মুফতী আহমদ ইয়ার খান নাঈমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন- (এর দ্বরা উদ্দেশ্য হলো যে, যখন বান্দা আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জন করে, তাঁর প্রিয় হয়ে যায়; তখন) এই বান্দা ফানাফিল্লাহ হয়ে যায়। যার ফলে খোদায়ী (অর্থাৎ আল্লাহ পাক প্রদত্ত বিশেষ) ক্ষমতা তার অঙ্গে কার্যকর হয় আর সে এমন কাজ করে, যা যুক্তির উর্ধ্বে । (মিরআতুল মানাজীহ, ৩/৩০৯)
হাদীসে পাকের ৩টি বিষয়বস্তু এবং গাউসে পাকের জীবনী
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা, এই হাদীসে ক্বুদসীতে ৩টি বিষয় আলোচিত হয়েছে- (১) আল্লাহ পাকের দরবারে আউলিয়ায়ে কিরামের মর্যাদা ও সম্মান কেমন? (২) ওয়ালী শব্দের অর্থ হলো- বন্ধু, আল্লাহর প্রিয় ও পছন্দনীয় বান্দা। এর দু’টি ধরন রয়েছে। একটি ধরন হলো- আল্লাহ পাক খোদ নিজে কাউকে ওয়ালী, বন্ধু, প্রিয়জন হিসেবে গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে এ ধরনটি হলো ওয়াহবী, কাসবী নয়। অর্থাৎ বান্দা নিজের পরিশ্রম, নিজের প্রচেষ্টায় আল্লাহর মাহবূব বা আল্লাহর ওয়ালী হতে পারে না, আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা বেলায়তের মুকুট দান করেন। দ্বিতীয় ধরনটি হলো- বান্দা নিজে আল্লাহ পাকের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করা, এটা হলো কাসবী। বান্দা নিজের প্রচেষ্টা, পরিশ্রম, আমলের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করতে পারে। বান্দা কীভাবে আল্লাহ প্রতি ভালাবাসা প্রকাশ করতে পারে? আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা কীভাবে করবে? এর উপায়ও এই হাদীসে ক্বুদসীতে বলা হয়েছে। (৩) বান্দা যদি আল্লাহর প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে