Book Name:Hadees e Qudsi Aur Shan e Ghous e Azam
আর আল্লাহ যদি তাঁর দয়া ও অনুগ্রহে বান্দার ভালবাসা প্রকাশকে কবুল করেন ঐ বান্দাকে নিজের মাহবূব, নিজের বন্ধু এবং নিজের ওয়ালী হিসেবে গ্রহণ করেন; তবে তখন ঐ বান্দার শান কেমন হবে? এই বিষয়টিও হাদীসে ক্বুদসীতে বর্ণিত হয়েছে।
আসুন, হাদীসে ক্বুদসীর এই তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে হুযুর গাউসে পাক رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ ‘র পবিত্র জীবনীর দিকে দৃষ্টিপাত করি -
ওয়ালীর সাথে শত্রুতা, আল্লাহর সাথে যুদ্ধ
আল্লাহ পাক হাদীসে ক্বুদসীতে ইরশাদ করেন: مَنْ عَادَی لِیْ وَلِیًّا آذَنْتُہٗ بِالْحَرْبِ যে আমার কোনো ওয়ালীর প্রতি শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করি।
আল্লাহ পাকের দরবারে আউলিয়ায়ে কিরামের মর্যাদা, মর্তবা সম্মান হলো এমনই। যে বান্দার অন্তরে আউলিয়ায়ে কিরামের জন্য বিন্দু পরিমাণও শত্রুতা থাকবে, সে বান্দা কখনোই আল্লাহ পাকের প্রিয় বান্দা হতে পারবে না। কারো অন্তরে যদি আউলিয়ায়ে কিরামের শত্রুতা থাকে, আবার শত্রুতা পোষণ করে সে আল্লাহকেও রাজি করে ফেলবে - এমনটা কখনোই সম্ভব নয় । কারণ কী? এর কারণ হলো- যে অন্তরে আউলিয়ায়ে কিরামের জন্য শত্রুতা রয়েছে, আল্লাহ পাক তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা, এখানে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে- মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি মানুষের সাথে হয়, তবুও জেতার সম্ভাবনা থাকে। আর যদি মানুষ তার সৃষ্টিকর্তা, তার রব, তার রিযিকদাতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে, সেখানে জেতার প্রশ্নই আসে না। এ ক্ষেত্রে পরাজয়, অপমান, গ্লানি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের ধ্বংস সুনিশ্চিত। নমরুদ আল্লাহ পাকের সাথে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলো। ঐ দূর্ভাগা হাজারো সৈন্য জমায়েত করলো। অস্ত্র ধরলো। তীর, তলোয়ার যা কিছু নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া যায়, তা দিয়ে প্রস্তুতি নিলো। যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হলো।
ঐ দূর্ভাগা আল্লাহ পাকের সাথে কী যুদ্ধ করবে? আল্লাহ পাক তাঁর সৃষ্টি থেকে ক্ষুদ্র একটি সৃষ্টি মশা পাঠালেন। চারদিক থেকে এতো মশা এসে ছেয়ে গেলো যে সূর্য ঢেকে গেলো। দিনের বেলাতেই অন্ধকার ছেয়ে গেলো। এই মশাগুলো নমরুদের সৈন্য দলকে কামড়ানো শুরু করলো আর পুরো সৈন্য দলের চামড়া, মাংস সব খেয়ে ফেললো। কেবল পুরো সৈন্য দলের হাঁড়, কঙ্কাল পড়ে রইলো। সবশেষে একটি মশা গিয়ে নমরুদের মাথায় ঢুকে পড়লো। কিতাবে উল্লেখ আছে- ৪০০ বছর ধরে সেই মশা নমরুদকে কামড়াতে থাকলো এবং তার কারণে নমরুদের মাথায় জুতা দিয়ে আঘাত করতে হতো।
(তাফসীরে ইবনে কাসীর, পারা-৩, সূরা বাকারা, ২৫৮ নং আয়াতের পাদটিকা, ১/৬৯৪)
আল্লাহর সাথে যুদ্ধের পরিণাম এমনই হয়। সুতরাং, সকলেই মনোযোগ দিয়ে দেখুন আউলিয়ায়ে কিরামের সাথে শত্রুতার পরিণতি কী হয়। যারা তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ অন্তরে লালন করতে চান তারা আগেভাগেই ভেবে নিন। এ কোনো ছোটোখাটো অপরাধ নয়। আউলিয়ায়ে কিরামের প্রতি শত্রুতা পোষণ করা হলো মূলত আল্লাহর সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা। আর যে আল্লাহ পাকের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তার দুনিয়া ও আখিরাত দুটোই ধ্বংস হয়ে যায়।