Book Name:Behtareen Khatakar Kon

যান, তাওবা করুন, নিজের অপরাধ স্বীকার করে লজ্জিত হোন, اِنْ شَآءَ الله তাওবা কবুল হবে এবং গুনাহের ময়লা থেকে আঁচল পরিষ্কার হয়ে যাবে।

 

তাওবার বরকত দ্রুত প্রকাশ পেলো

          হযরত হাবীব আযমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ অনেক বড় অলিয়ে কামিল ছিলেন, বসরা শহরের অধিবাসী ছিলেন, তাওবা করার পূর্বে তিনি অনেক ধনী ছিলেন আর লোকদেরকে সুদের বিনিময়ে ঋণ দিতেন, অবস্থা এমন ছিলো যে, যখন কোন ঋণগ্রহিতা থেকে ঋণ আদায় করতে যেতেন আর সে দিতে পারতো না তখন তার থেকে নিজের সময় নষ্ট করার জরিমানাও গ্রহন করতেন, একবার তিনি কোন ঋণগ্রস্থের নিকট গেলেন, দরজায় কড়াঘাত করলেন, সে ঋণগ্রহিতা নিজে তো ঘরে উপস্থিত ছিলো না, অবশ্য তার স্ত্রী বললো যে, আমার স্বামী তো ঘরে নেই আর আমার নিকট কোন টাকাও নেই, যা আমি আপনাকে দিবো, তবে আজকে আমরা ছাগল জবাই করেছিলাম, এর সম্পূর্ণ মাংস শেষ হয়ে গেছে, মাথা অবশিষ্ট আছে, তা নিতে চাইলে নিয়ে নিন, হাবীব আযমী (رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ) ছাগলের মাথা নিলেন আর ঘরে ফিরে এলেন, স্ত্রীকে বললেন: এটি রান্না করো! স্ত্রী বললো: ঘরে লাকড়িও নাই আর অন্যান্য জিনিসপত্রও নাই, অতএব তিনি লাকড়ি ও অন্যান্য জিনিসও ঋণগ্রহিতার ঘর থেকেই নিয়ে এলেন, স্ত্রী রান্নার পাত্র প্রস্তুত করলেন, এখনো খাবার প্রস্তুত হয়নি ইতিমধ্যে একজন ভিক্ষুক এসে গেলো, হাবীব আযমী (رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ) তাকে কথা শুনিয়ে বের করে দিলেন, খাবার প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলো, তিনি খাবার খেতে বসবেন কিন্তু যখনই স্ত্রী রান্নার পাত্র খুললেন তখন সেখানে ছাগলের মাথার পরিবর্তে রক্তে পরিপূর্ণ ছিলো, স্ত্রী চিৎকার দিয়ে বললো: দেখো তোমার কৃপণতার পরিণাম...!! পাত্র রক্তে ভরে গেছে।

          পাত্র এভাবে রক্তে পরিবর্তিত হওয়া মূলতঃ কুদরতের একটি সতর্কতা ছিলো, যা হযরত হাবীব আযমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ অনুধাবন করেছেন আর তৎক্ষণাৎ সমস্ত গুনাহ ছেড়ে দেয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে নিলেন, এখন হযরত হাবীব আযমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ ঘর থেকে বের হলেন, গলি দিয়ে হাঁটছিলেন এমন সময় কোনে খেলা করা বাচ্চারা একে অপরকে বলছে: দূরে সরে যাও! সুদখোর হাবীব আসছে, যদি তার পায়ের ধূলো আমাদের উপর পড়ে যায়, তবে আমরাও হতভাগা হয়ে যাবো। 

          এটি দ্বিতীয় আঘাত ছিলো, এখন তো হযরত হাবীব আযমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এর মন একেবারে গলে গেলো, তিনি দ্রুত হযরত ইমাম হাসান বসরী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এর খেদমতে উপস্থিত হলেন আর সমস্ত গুনাহ থেকে সত্যিকার তাওবা করে নিলেন।

          তাওবার পর তিনি ঘরে ফিরে আসছিলেন তখন দেখলেন, সেই বাচ্চারা গলিতে খেলছিলো, এখন সেই বাচ্চারা তাঁকে দেখে একে অপরকে বললো: এখন হাবীব তাওবা করে ফিরে আসছে, দূরে সরে যাও, যদি আমাদের পায়ের ধূলো তাঁর উপর পড়ে যায় তবে আমরা গুনাহগার হবো।

          হযরত হাবীব আযমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ বাচ্চাদের এই কথা শুনে তো কেঁপে উঠলেন আর আল্লাহ পাকের দরবারে আরয করলেন: হে মালিক! তোমার কুদরতও আজব, আজই আমি তাওবা করলাম আর আজই তুমি আমার সুনাম ঘোষণাও করে দিলে।