تَوَجُّہ اِلَی اللہ

Book Name:تَوَجُّہ اِلَی اللہ

صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب                 صَلَّی اللهُ عَلٰی مُحَمَّد

 

সুরা মুজাদালার শানে নুযুল

          প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! একটি ফিকহী মাসয়ালা রয়েছে, যাকে যিহার বলা হয় ইলমে ফিকাহের কিতাবে যিহার নামে পুরো একটি অধ্যায় রয়েছে যারা বিবাহিত তাদের এই মাসয়ালা অবশ্যই শিখা উচিৎ, সহজভাবে যিহারের অর্থ হলো যে, নিজের স্ত্রীকে নিজের মা বা বোনের মতো বলা, যেমন; স্বামী তার স্ত্রীকে বললো: তুমি আমার জন্য আমার মায়ের মতো এটাই হলো যিহার, ইসলামের প্রাথমিক যুগে যিহারের হুকুমও তালাকের মতো ছিলো অর্থাৎ কেউ যদি তার স্ত্রীকে তার মা বা বোন ইত্যাদির মতো বলে, তবে তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হয়ে যেতো।

          হযরত খাওলাহ বিনতে ছা'লাবা رَضِیَ اللهُ عَنْہَا নামে একজন সাহাবীয়া ছিলেন, একবার তাঁর স্বামী তাঁকে বলে দিলো: "তুমি আমার নিকট আমার মায়ের মতো" বলে তো দিলো, অতঃপর লজ্জিত হলো যে, এটা আমি কী বলে দিলাম, এখন চিন্তিত হয়ে গেলেন যে, এতে তো বিবাহ বাতিল হয়ে যায়, স্ত্রী স্বামীর জন্য হারাম হয়ে যায় এই চিন্তায় হযরত খাওলাহ বিনতে ছা'লাবা رَضِیَ اللهُ عَنْہَا প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দরবারে উপস্থিত হলেন, পুরো ঘটনা বর্ণনা করলেন এবং আরয করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! আমার সম্পদ শেষ হয়ে গেছে, মা-বাবা মৃত্যু বরণ করেছে, বয়সও অনেক হয়ে গেছে এবং সন্তানরা ছোট ছোট, যদি তাদের বাবার নিকট ছেড়ে দিই, তবে মা ছাড়া ছোট বাচ্চাদের লালন পালন কিভাবে হবে আর যদি আমার কাছে রাখি, তবে ক্ষুধায় মারা যাবে, এখন এমন কি উপায় যে, আমি এবং আমার স্বামীর মাঝে বিচ্ছেদ হবে না। রাসূলে পাক صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সম্পূর্ণ আবেদন শুনে বললেন: তোমার মাসয়ালার ব্যাপারে আমার নিকট কোনো হুকুম নেই (অর্থাৎ এখনো যিহার সম্পর্কে কোনো নতুন হুকুম অবতীর্ণ হয়নি এবং পুরানো রীতি হলো যে, স্ত্রী হারাম হয়ে যায়)

          হযরত খাওলাহ رَضِیَ اللهُ عَنْہَا খুব চিন্তিত ছিলেন, অন্তরে দুঃখের সাগর ফুলে উঠছিলো এবং ক্ষণে ক্ষণে সন্তানদের খেয়াল আসছিলো তিনি رَضِیَ اللهُ عَنْہَا বারবার প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দরবারে আরয করেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! আমার স্বামী তালাকের শব্দ বলেননি, তিনি আমার সন্তানদের পিতা, (ইয়া রাসূলাল্লাহ صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم! কোনো  উপায় তো বলুন) কিন্তু রাসূলে পাক صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم একই উত্তর দিচ্ছিলেন: এখনো এই মাসয়ালার ব্যাপারে কোনো নতুন হুকুম অবতীর্ণ হয়নি

          অবশেষে যখন তিনি তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী উত্তর পেলেন না তখন দোয়ার জন্য দুহাত তুলে দিলেন এবং আল্লাহ পাকের দরবারে আরয করলেন: হে আল্লাহ পাক!  আমার মুখাপেক্ষীতা, অসহায়ত্ব এবং অস্থির অবস্থার প্রতি রহম করো, আপন মাহবুব صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রতি আমার হকে এমন হুকুম অবতীর্ণ করো, যাতে আমার বিপদ দূর হয়ে যায় তখনো হযরত খাওলাহ رَضِیَ اللهُ عَنْہَا আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছিলেন, দুঃখী হৃদয়ের দোয়া কবুল হলো এবং হযরত জিব্রাইল عَلَیْہِ السَّلَام অহী নিয়ে উপস্থিত হয়ে গেলেন (তাফসীরে খাযায়িনুল ইরফান, পারা ২৮, সুরা মুজাদালা,