تَوَجُّہ اِلَی اللہ

Book Name:تَوَجُّہ اِلَی اللہ

অতীতের দিকে তাকাই, বেশি না শুধু ৫০ কিংবা ৬০ বছর পূর্বে চলে যান, ঘরে একটি সুন্দর পরিবেশ ছিলো, মায়েরা তাদের কোমলমতি শিশুদের আমলী ভাবে আল্লাহর যিকির শেখাতো। * ছোট বাচ্চা হাঁটতে গিয়ে পড়ে যেতো বা হোঁচট খেতো তখন মায়ের মুখ থেকে বের হয়ে যেতো: حَسْبِیَ الله * শিশুরা রাতে ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে তখন মায়েরা তাদের বুকে লাগিয়ে আল্লাহ পাকের যিকির করতো * যদি চমকপ্রদ কিছু ঘটে যেতো তখন মানুষের মুখ থেকে বের হতো: হে আল্লাহ! ভালো করো! বা এরূপ আরো অনেক সুন্দর সুন্দর বাক্য মুখে থাকতো কিন্তু এখন মানুষ মর্ডান হয়ে গেছে, এগুলো তো এখন কমই দেখা যায়, এখন তো মানুষ হা-হুতাশ করতে থাকে অথবা বলে: Oh shit

 

          এসব যদিও গুনাহ নয় কিন্তু আহ! এমন মুহুর্তেও অর্থহীন শব্দ মুখ থেকে বের হওয়ার পরিবর্তে যেনো আমরা আল্লাহ পাকের যিকির করি, আমাদের মনযোগ যেনো শুধুমাত্র আল্লাহ পাকেরই দিকে থাকে * সমস্যা আসুক * পেরেশানি আসুক * অসুস্থ হোক * ঋণগ্রস্ত হোক * অভাব আসুক তখন  আমাদের সর্বপ্রথম মনযোগ আপন প্রিয় আল্লাহ পাকের প্রতি যেনো যায় * আমাদের বিপদ থেকে মুক্তি কে দিবে? আল্লাহ পাক দিবে * রোগ থেকে আরোগ্য কে দিবে? আল্লাহ পাক দিবে * ঋণগ্রস্ততা থেকে, দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি কে দিবে? আল্লাহ পাক দিবে অতএব উপায়-উপকরণের প্রতি নয় বরং আমরা مُسَبِّبُ الْاَسْبَاب (অর্থাৎ উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাক) এর উপর ভরসা করবো, আল্লাহ পাকেরই প্রতি মনযোগ রাখার অভ্যাস গড়ুন, আহ! আমাদের অন্তরে যেনো আল্লাহ পাকের ভালবাসায়  দৃঢ় হয়ে যায় এবং আমাদের মনযোগের কেন্দ্রবিন্দু যেনো আল্লাহ পাকের পবিত্র সত্তা হয়ে যায়।

 

বুযুর্গানে দ্বীনের সুন্দর কনসেপ্ট

          হযরত আবুল হাসান সাররী সাকাতী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এর ঘটনা, তাঁর খেদমতে একদা তাঁর এক প্রতিবেশীনি এলো এবং আরয করলো: হে আবুল হাসান! রাতে আমার ছেলেকে সৈন্যরা ধরে নিয়ে গেছে, হয়তো তারা তাকে কষ্ট দিবে, অনুগ্রহ করে! আমার ছেলের জন্য সুপারিশ করুন! প্রতিবেশীনির কান্না শুনে হযরত সাররী সাকাতী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ দাঁড়িয়ে বিনয় একাগ্রতার সহিত নামাযে মগ্ন হয়ে গেলেন যখন অনেক্ষণ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো তখন সেই মহিলা বললো: হে আবুল হাসান! তাড়াতাড়ি করুন, এমন যেনো না হয় যে, বিচারক আমার ছেলেকে বন্ধি করে দেন হযরত সাররী সাকাতী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ নামাযে মগ্ন রইলেন, অতঃপর সালাম ফেরানোর পর বললেন: হে আল্লাহ পাকের বান্দী! আমি তোমার সমস্যারই তো সমাধান করছি, তখনো এই কথাবার্তা চলছিলো, সেই প্রতিবেশিনীর খাদিমা এসে বললো: বিবিজি! বাড়ি চলুন! আপনার ছেলে বাড়ি ফিরে এসেছে (উয়ুনুল হেকায়াত, .২৬৬)

 

          হে আশিকানে রাসূল! এটাই হলো আল্লাহ পাকের প্রতি মনযোগী হওয়া এর মুবারক কনসেপ্ট...! আমাদের অবস্থা কেমন? * আমরা হঠাৎ কোনো খারাপ সংবাদ শুনলে তখন মাথায় হাত দিয়ে বসে যায় * কোনো বিপদ এলে, পেরেশানি এলে তখন দিকভ্রান্ত হয়ে ঘুরতে থাকি