Book Name:Tazkia e Nafs

রোযাদারদের মহল্লা

          হযরত মালিক বিন দীনার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ অনেক বড় আল্লাহর ওলী ছিলেন, অন্যান্য আউলিয়ায়ে কেরামদের رَحِمَہُمُ اللهُ السَّلَام ন্যায় তিনি নফস কুশী (অর্থাৎ নফসের উচ্চ আকাঙ্খা থেকে বেঁচে) থাকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন। শায়খে তরীকত, আমীরে আহলে সুন্নাত হযরত আল্লামা মাওলানা মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদেরী دَامَتْ بَرَکَاتُہُمُ الْعَالِیَہ তাঁর কিতাব ফয়যানে রমযানে লিখেন: হযরত মালিক বিন দীনার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ (নফসের উচ্চ আকাঙ্খা থেকে হেফাযতের) জন্য ৪০ বছরযাবত কখনো খেজুর খাননি। ৪০ বছর পর তাঁর খুবই খেজুর খেতে মন চাইলো তখন তিনি নফস কুশী (অর্থাৎ সেই আকাঙ্খা নিস্তেজ) করার জন্য লাগাতার এক সাপ্তাহ রোযা রাখলেন, এরপর খেজুর ক্রয় করে দিনের বেলায় বসরা শরীফের একটি মহল্লার মসজিদে প্রবেশ করলেন, যখনই খাওয়ার জন্য খেজুর বের করলেন একটি শিশু চিৎকার দিয়ে উঠলো: আব্বু! মসজিদে অমুসলিম এসেছে। শিশুর বাবা এটা শুনে হাতে লাঠি নিয়ে দৌড়ে আসলেন কিন্তু যখন হযরত মালিক বিন দীনার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ কে দেখলেন তখন চিনে ফেললেন আর ক্ষমা চেয়ে বললেন: হুজুর! আসলে কথা হলো আমাদের এলাকায় সমস্ত মুসলমানরা রোযা রাখে, অমুসলিম ব্যতীত দিনের বেলায় এখানে কেউ আহার করে না, এজন্য বাচ্চা আপনাকে অমুসলিম বলে সন্দেহ করেছে। দয়া করে! আপনি তার অপরাধ মাফ করে দিন!

          হযরত মালিক বিন দীনার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ উত্তেজিত হয়ে বললেন: বাচ্চাদের ভাষা গাইবী ভাষা হয়ে থাকে। এরপর শপথ করলেন যে, আর কখনো খেজুর খাওয়ার নাম নিবো না। (তাযকিরাতুল আউলিয়া, ৩৩ পৃষ্ঠা, সারাংশ)

 

          প্রিয়ইসলামী ভাইয়েরা! হযরত মালিক বিন দীনার رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এর এই চমৎকার ঘটনার মধ্যে আমাদের জন্য শিক্ষার ২টি বিষয় রয়েছে:

 

(১) পূর্বেকার মুসলমানদের রোযার প্রতি ভালোবাসা

          (১) প্রথম নাম্বারে এটা দেখুন! পূর্বেকার মুসলমানরা রোযার প্রতি কী পরিমাণ ভালোবাসা পোষণ করতেন, রমযান মাস ছাড়া অন্যান্য দিনেও পুরো এলাকায় রমযানের মতো পরিবেশ হতো, এমনকি বাচ্চারা পর্যন্ত এটা মনে করে নিলো যে, হয়তো দিনের বেলায় খাওয়া (অর্থাৎ নফল রোযা না রাখা) অমুসলিম হওয়ার পরিচয়।

 

          আফসোস! বর্তমানে তো অবস্থা এর বিপরীত, এমন কতো অলস রয়েছে যারা শরয়ী অপারগতা ছাড়া রমযানুল মুবারকের মতো ফরয রোযাও রাখে না, এটা কবিরা গুনাহ, হারাম ও জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ, অতঃপর দুঃসাহসীকতার বহিঃপ্রকাশ এভাবে ঘটায় যে
* রোযারদের সামনেই আহার করে * সিগারেটের মাথায় আগুণ লাগিয়ে বসে থাকে * পান চাবাতে থাকে * এমনকি অনেকে তো এমন নির্লজ্জ হয়ে থাকে  যে, সবার সামনে পানি পান করে এমনকি খাবার খেতেও লজ্জাবোধ করে না। আল্লাহ পাক আমাদেরকে মাহে রমযানুল মুবারকের অসম্মান করা থেকে হেফাযত করুক।

اٰمِين بِجا هِ النَّبِىِّ الْاَمين صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم