Book Name:Tazkia e Nafs

 

মাহে রমযানের রোযা ফরয

          মনে রাখবেন! মাহে রমযানের দুইটি/ চার বা দশটি রোযা নয় বরং পুরো মাসের রোযা রাখা প্রত্যেক বিবেকবান ও প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমানের উপর ফরয। কুরআনে করীমে রয়েছে:

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا کُتِبَ عَلَیْکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِکُمْ لَعَلَّکُمْ تَتَّقُوْنَ

(পারা: ২, সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)              কানযুল ঈমানের অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন পূর্ববর্তীদের উপর ফরয হয়েছিলো, যাতে তোমাদের পরহেযগারী অর্জিত হয়।

 

          দেখুন! এই আয়াতে করীমায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে সুতরাং শরয়ী অপরাগতা ব্যতীত রমযানুল মুবারকের একটা রোযাও বর্জন করা কবীরা গুনাহ (রসায়িলে ইবনে নাজীম, আর রিসালাতুছ ছালাছাতু ওয়াছ ছুলাছুনা ফি বয়ানিল কাবায়ির ওয়াস সাগায়ির, ৩৫৩ পৃষ্ঠা) এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ। কিতাবুল কাবায়িরে রয়েছে: যে ব্যক্তি কোন রোগ বা অপারগতা ব্যতীত মাহে রমযানের রোযা ছেড়ে দিলো সে ব্যভিচারী, চাঁদাবাজ ও মদ্যপায়ীর চেয়ে নিকৃষ্ট।

(আল কাবায়ির, আল কাবিরাতুল আশিরাতু ইফতার রমযান বেলা ওযর ওয়ালা রুখসত, ৫৫ পৃষ্ঠা)

صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب                 صَلَّی اللهُ عَلٰی مُحَمَّد

 

রোযার উপকারিতা ও সাওয়াব

          কুরআনে করীম ও হাদিসে মুবারকার মধ্যে রোযা রাখার অনেক ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন * রোযা পালনকারী ও রোযা পালনকারীনির জন্য আল্লাহ পাক ক্ষমা ও অগণিত সাওয়াব প্রস্তুত করে রেখেছেন। (পারা: ২২, সূরা আহযাব, আয়াত: ৩৫) * হাদিসে মুবারকায় রয়েছে জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যেটা দিয়ে শুধুমাত্র রোযাদারই প্রবেশ করবে। (বুখারী, কিতাবুস সউম, বাবুর রিয়ান লিস সায়িমিন, ৫০২ পৃষ্ঠা, হাদিস: ১৮৯৬) *মাহে রমযানের রোযা পূর্ববর্তী গুনাহের কাফফারা। (সহীহ ইবনে হাব্বান, কিতাবুস সউম, বাবু ফদলু রমদ্বান, ৯৫৭ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৪৪৪) *রোযা জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য মজবুত কেল্লা। (শুয়াবুল ঈমান, বাবু ফিস সিয়াম, ৩/২৮৯ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৫৭১) *রোযা কিয়ামতের দিন রোযাদারের জন্য সুপারিশ করবে। (মুসতাদরাক, কিতাবু ফাযায়িলুল কুরআন, বাবুস সিয়াম ওয়াল কুরআন, ২/২৫৫ পৃষ্ঠা, হাদিস: ২০৮০) *মাহে রমযানের একটা রোযাও নিরবতা ও প্রশান্তির সাথে পালনকারীর জন্য জান্নাতে সবুজ পদ্মরাগ ও লাল ইয়াকুতের ঘর নির্মাণ করা হবে। (মুজামু আওসাত, ১/৪৭৯ পৃষ্ঠা, হাদিস: ১৭৬৮) * রোযাদারের ঘুম ইবাদত এবং তার নিরবতা তাসবীহ হিসেবে গণ্য করা হয়। (শুয়াবুল ঈমান, বাবু ফিস সিয়াম, ৩/৪১৫ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৯৩৮) * ইফতারের সময় রোযাদারের দোয়া প্রত্যাখান করা হয় না। (শুয়াবুল ঈমান, বাবু ফিস সিয়াম, ৩/৪০৭ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৯০৩) * রোযা রাখার দ্বারা সুস্বাস্থ্য লাভ হয়। (মুজামু আওসাত, ৬/১৪৭ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৮৩১২) * যদি রোযাদার لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ, سُبْحَانَ الله অথবা اَللهُ اَكْبَرُ পড়ে তবে সেটার সাওয়াব ৭০ হাজার ফেরেশতা সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত লিখতে থাকে। (শুয়াবুল ঈমান, বাবু ফিস সিয়াম, ৩/২৯৯ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৫৯১)