Book Name:Namaz Ke Deeni or Dunyawi Fawaid
যখন প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর দরবারে ক্ষুধা আগমন করতো
হযরত মুফতি আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এই আয়াতে মোবারাকার পাদটীকায় লিখেন: নামায মানুষকে দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত করে আল্লাহ পাকের প্রতি মনযোগী করে দেয়, তাই এর বরকতে দুনিয়াবী কষ্টসমূহ অন্তর থেকে ভুলিয়ে দেয়া হয়। “তাফসীরে আযীযির লিখক” এই স্থানে বর্ণনা করেন: নবী করীম صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর ঘরে যখন আহার থাকতো না এবং রাতে কোন কিছু খেতেন না এবং ক্ষুধা প্রাধান্য লাভ করতো তখন নবী করীম صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم মসজিদে তাশরীফ নিয়ে এসে নামাযে মশগুল হয়ে যেতেন।
(তাফসীরে নঈমী, ১ম পারা, সূরা বাকারা, ৪৬নং আয়াতের পাদটীকা, ১/৩৪৯)
যখন সন্তানের মৃত্যুর সংবাদ পেলেন
হযরত ইবনে আব্বাস رَضِیَ اللهُ عَنْہُ এর সন্তানের সন্তান ছিলো, তিনি তাকে খুবই ভালবাসতেন, একবার হল কি যে, তাঁর এই প্রিয় ছেলের ইন্তিকাল হয়ে গেলো, যখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস رَضِیَ اللهُ عَنْہُ সংবাদ পেলেন যে, তার ছেলে মারা গেছে, তখন তিনি এই সংবাদ শুনে নামাযে লিপ্ত হয়ে গেলেন আর তা এতো দীর্ঘায়িত করলেন যে, তাঁর ছেলেকে গোসলও দেয়া হল আর কাফনও পরিধান করানো হয়ে গেলো, এমনকি লোকেরা তাকে দাফন করে যখন ফিরে আসলো, তখন তিনি সালাম ফিরালেন। লোকেরা এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন: আমি এই সন্তানকে খুবই ভালোবাসতাম, আমি তার বিচ্ছেদ বেদনা সহ্য করতে পারতাম না, তাই নামাযে লিপ্ত হয়ে এই বেদনা ভুলে গেলাম।
(তাফসীরে নঈমী, ১/২৯৯-৩০০)
প্রসিদ্ধ ওলী আল্লাহ হযরত সারী সাকতী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এর বরকতময় খেদমতে তাঁর এক প্রতিবেশী মহিলা উপস্থিত হয়ে আরয করলো: রাতে আমার সন্তানকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে, সম্ভবত তারা তাকে নির্যাতন করছে, দয়া করুন! আমার সন্তানের জন্য সুপারিশ করুন অথবা কাউকে আমার সাথে প্রেরণ করুন। প্রতিবেশী মহিলার আবেদন শুনে তিনি দাঁড়িয়ে বিনয় ও একাগ্রতার সহিত নামাযে লিপ্ত হয়ে গেলেন। যখন অনেক্ষণ হয়ে গেল, তখন সেই মহিলা বললো: হে আবুল হাসান! তাড়াতাড়ি করুন! এমন যেন না হয়, বিচারক আমার সন্তানকে জেল খানায় পাঠিয়ে দেয়! তিনি নামাযে লিপ্ত রইলেন, অতঃপর সালাম ফিরানোর পর বললেন: “হে আল্লাহ পাকের বান্দিনী! আমি তোমার সমস্যারই তো সমাধান করছি।” তখনো এই কথাবার্তাই চলছিলো, সেই প্রতিবেশী মহিলার খাদেমা এলো এবং বললো: বিবি সাহেবা! ঘরে চলুন! আপনার সন্তান ঘরে ফিরে এসেছে। (উয়ুনূল হিকায়াত, ১৬৪ পৃষ্ঠা)
আমাকে নামাযের মাধ্যমে প্রশান্তি দান করো!
হে আশিকানে রাসূল! যখন কোন বিপদ আসে বা ক্ষতির সম্মুখীন হন অথবা কোন চরম পরিস্থিতির সম্মুখীন হন তখন দ্রুত নামাযের সহায়তা নেয়া উচিৎ, আমাদের প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে নামাযে লিপ্ত হয়ে যেতেন, কেননা নামায সকল যিকির ও দোয়ার সমষ্টি (অর্থাৎ পরিপূর্ণতা প্রদানকারী), এর বরকতে দুঃখ কষ্টে প্রশান্তি অর্জিত