Book Name:Imam e Jafar Ki Mubarak Aadatein
উত্তর দাও না...? তারপর বলতেন: আফসোস! আমার এবং তোমাদের মধ্যে একটি পর্দা হয়ে গেছে, কিন্তু শীঘ্রই আমি তোমাদের মতো হবো। তিনি এভাবেই বলতে থাকতেন, যতক্ষণ না সকাল হয়ে যেত এবং তারপর ফজরের নামাযের জন্য মসজিদে যেতেন। (ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন, ৫৮৮ পৃষ্ঠা)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! শিক্ষা ও উপদেশের জন্য কবরস্থানে যাওয়া, কবর গুলো দেখে শিক্ষা গ্রহণ করা, কবরের অবস্থা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা খুবই চমৎকার অভ্যাস। ভালো মানুষের জীবনে সাধারণত এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায় যে, তারা কবরস্থানে যেতেন, বরং কবরস্থানে যাওয়া হল নবীদের সর্দার, হুযুর পূরনূর, صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর একটি সুন্নাতে মোবারকা, আমাদেরও উচিত মাঝেমাঝে কবরস্থানে যাওয়া, কিছু সময় সেখানে বসে নিজের মৃত্যু, কবরের গভীর গর্ত, তার একাকীত্ব এবং ভীতির ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা। আমাদের প্রিয় নবী, রাসূলে আরবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: "কবর গুলো দেখো! নিঃসন্দেহে কবরগুলো দেখা, দুনিয়া থেকে বিমুখ করে এবং পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়।" (ইবনে মাজাহ, ২৫২ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৫১৭১)
চাইলে সপ্তাহে একটি দিন নির্ধারণ করুন! কিছু সময়ের জন্য কবরস্থানে যান! কবরবাসীদের জন্য ফাতিহা এবং ইসালে সাওয়াব করুন! এবং কিছু সময় বসে কবর ও পরকালের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করুন! اِنْ شَآءَ الله এর বরকতে *আল্লাহর ভয় নসীব হবে * হৃদয় কোমল হবে * পাপের অভ্যাস ছুটে যাবে * হৃদয়ে আল্লাহ ও রাসূলের ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে, *সৎ কাজের ওপর অটলতা লাভ হবে, এবং * আল্লাহর ভয়ে কান্না করা নসীব হবে।
صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب صَلَّی اللهُ عَلٰی مُحَمَّد
ইমাম জাফর সাদিক رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এর আল্লাহর ভয়
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! ইমাম জাফর সাদিক رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ খুবই খোদাভীরু ছিলেন। শিশু কাল থেকেই তিনি আল্লাহর ভয়ে অনেক কাঁদতেন এবং ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতেন, এমনকি প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের সহানুভূতি হতো। ইমাম জাফর সাদিক رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ ’র শিশুকালের একটি ঘটনা রয়েছে, তখন তাঁর বয়স প্রায় ৪ বছর ছিল। একদিন তিনি প্রচণ্ড কাঁদছিলেন, কেউ একজন আলে রাসূলের সেবা করার জন্য উজ্জীবিত হয়ে বললেন: "শাহজাদা! কী হয়েছে? কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে হুকুম করুন, এখনিই ব্যবস্থা করবো।" এই কথা শুনে ইমাম জাফর সাদিক رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ আরো বেশি কাঁদতে শুরু করলেন এবং বললেন: "চাচাজান! আল্লাহর ক্রোধ এবং জাহান্নামের শাস্তির ভয়ে আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।" সেই ব্যক্তি করুণাস্বরে বললেন: "শাহজাদা! আপনি তো খুব ছোট, এতো ভয় কেন? শান্ত থাকুন! শিশুদের শাস্তি দেওয়া হয় না।" এই কথা শুনে ইমাম জাফর সাদিক رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ আরো গভীরভাবে আল্লাহর ভয়ে কাঁদতে শুরু করলেন এবং তিনি বললেন: চাচাজান! আমি দেখেছি যে বড় বড় কাঠ জ্বালানোর জন্য তার চারপাশে ছোট ছোট কাঠের টুকরো রাখা হয়, ছোট কাঠের টুকরোগুলোতে দ্রুত আগুন ধরে যায় এবং সেগুলোর মাধ্যমে বড় কাঠগুলোও জ্বলে ওঠে। আমি ভয় পাচ্ছি যে, আবু জাহল ও আবু লাহাবের মতো বড় বড় অমুসলিমদের জাহান্নামে পোড়ানোর জন্য ছোট কাঠের টুকরোগুলোর জায়গায় আমাকে যেন আগুনে ফেলা না হয়।
(নেকীর দাওয়াত, ৫৮৫ -৫৮৬ পৃষ্ঠা)