Book Name:Mola Ali Aur Fikr e Akhirat
সম্পদ জমা করার ধ্যানে মগ্ন থেকে হালাল হারামের পার্থক্য ভুলে বসে গুনাহেভরা জীবন অতিবাহিত করার কারণে জাহান্নামের আযাবের অধিকারী হবে।
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এই দুনিয়া ধোকার ঘর, দ্রুতই ধ্বংস হয়ে যাবে, আমরা এই কথা জানি কিন্তু আফসোস! আমরা চিন্তা করিনা। হযরত মাওলা আলী رَضِیَ اللهُ عَنْہُ আমাদেরকে উপদেশ দিয়ে বলেন: আমি তোমাদের ব্যাপারে দুটি জিনিসের ভয় করছি: (১) দীর্ঘ আশা (অর্থাৎ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার আশা করা) (২) কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। নিশ্চয় দীর্ঘ আশা আখিরাতকে ভুলে যাওয়ার কারণ এবং কুপ্রবৃত্তি মানুষকে সত্যের পথ থেকে বিপথগামী করে। (আয যুহুদ লিইবনে মোবারক, পৃঃ ১১০, সংখ্যা: ২৫৫)
প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! এই দুটি বড় অসুস্থতা, যা আজ আমাদেরকে ধোকায় ফেলেছে, আমরা মনে করি যে, এখনো জীবন অনেক বাকী, আমাকে দীর্ঘ জীবন বেঁচে থাকতে হবে বরং সত্য বললে তো মৃত্যুর খেয়ালই আসে না। কারো মৃত্যুর খবর এলে আমরা মনে মনেই মিথ্যা প্রশান্তি দিয়ে থাকি, উদাহরণস্বরূপ * সে হার্টের রোগী ছিল * তার ক্যান্সার হয়ে গিয়েছিল, এই কারণেই মারা গেছে * অমুক ড্রাইভিং ঠিকভাবে করত না, এই কারণে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে * অমুক সতর্কতা অবলম্বন করত না, এই কারণে বিদ্যুতের তার থেকে বাঁচতে পারেনি এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে, এইভাবে আমরা মিথ্যা শান্ত্বনা দিয়ে প্রশান্তি লাভ করি অথচ সত্য হল, এখানে যে এসেছে তাকে যেতে হবে, মরতেই হবে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন:
کُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَۃُ الْمَوْتِ
(পারা ১৭, সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৫) কানযুল ঈমানের অনুবাদ: প্রত্যেক প্রাণকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।
এটা মৃত্যু, এর স্বাদ প্রত্যেককেই গ্রহণ করতে হবে, মৃত্যুর সম্পর্ক না সুস্থতার সাথে, না সতর্ক ড্রাইভিংয়ের সাথে, মৃত্যু না রোগের কারণে আসে, না দূর্ঘটনার মাধ্যমে আসে। এগুলো বাহ্যিক উপকরণ, অন্যথায় মৃত্যু তো শরীর থেকে রুহ বের হওয়ার নাম এবং রুহ আল্লাহ পাকের হুকুমে বের হয়। মালাকুল মউত (অর্থাৎ হযরত আজরাইল عَلَیْہِ السَّلَام) বের করেন। কত যুবক যারা বৃদ্ধকালের অপেক্ষায় ছিল কিন্তু আজ কবরে।
* কত সুস্থ লোক, যাদের সুস্থতা তাদেরকে ধোকায় ফেলেছিল, আজ তাদের শরীর কবরে গলে গেছে। * কতলোক এমন, যাদের শক্তির অহংকার ছিল, আজ কবরের মাটি তাদের সকল অহঙ্কার ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। যখন থেকে দুনিয়া সৃষ্টি হয়েছে, কোটি কোটি লোক দুনিয়ায় এসেছে, চলে গেছে, না পূর্বে কেউ বেঁচেছে, না আমরা বাঁচতে পারব। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন:
اَلَمْ یَرَوْا کَمْ اَھْلَکْنَا قَبْلَہُمْ مِّنَ الْقُرُوْنِ اَنَّہُمْ اِلَیْہِمْ لَا یَرْجِعُوْنَ
(পারা ২৩, সূরা ইয়াসীন, আয়াত ৩১) কানযুল ঈমানের অনুবাদ: তারা কি দেখেনি আমি তাদের পূর্বে কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি যে, তারা এখন তাদের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী নয়?