Book Name:Madine Ki Barkatain
মদীনার প্রেমিক, শায়খে তরিক্বত, আমীরে আহলে সুন্নাত دَامَتْ بَرَکَاتُہُمُ الْعَالِیَہ এর ও একটি খুব সুন্দর ঘটনা রয়েছে, মদীনা শহরে তার উপস্থিতির প্রথম রাত ছিল, মসজিদ শরীফে কিছু লোক তাহাজ্জুদের নামাযের জন্য উপস্থিত ছিল, সুবহে সাদিকের মনোরম দৃশ্য ছিল, আমীরে আহলে সুন্নাত, আগ্রহ ও আবেগপ্রবণ অবস্থায় নূর বিচ্ছুরিত সবুজ গম্বুজের যিয়ারত উপভোগ করে কদম শরীফের দিকে বাবে জিব্রাইল থেকে সবুজ গম্বুজের ছায়া পর্যন্ত হেঁটে যেতেন অতঃপর সেখান থেকে পিছন পা হেঁটে অন্য দিকে চলে যেতেন, অন্তরের অবস্থা বড়ই অদ্ভূত প্রেমময় ছিল। তিনি এই প্রেমময় অবস্থায় ছিলেন তখন একটি পরীক্ষায় পড়ে গেলেন। ঘটনা কিছুটা এরূপ হলো যে, মদীনার প্রেমিক প্রিয় নবীর প্রিয় সুন্নাত বাবরি চুল রেখেছিলেন। সেখানে উপস্থিত একজন পুলিশ কর্মকর্তার জানিনা কি মনে হলো যে, সে তাঁকে তার কাছে ডাকলো: تعال অর্থাৎ এখানে আসুন। যখন তিনি তার কাছে গেলেন, সে জিজ্ঞাসা করলো: এ কি করছেন? প্রেমাস্পদের দরবারে প্রেম ও ভাবাবেগপূর্ণ এই অনুভূতিগুলোকে কীভাবে ভাষায় বর্ণনা করা যায়? আল্লাহ পাক ভালো জানেন সে কী ভাবছে, আরও জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে সে তাঁর পাসপোর্ট চাইলো, তিনি বললেন: তা তো আমার বাসভবনে। তারপর সে তাঁর চুলের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো: এটা কি? সুন্নাতের প্রেমিক হাসিমুখে জবাব দিলেন: এটি সুন্নাত। সম্ভবত ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে সে আমীরে-আহলে-সুন্নাতের দাড়ি শরীফ স্পর্শ করে বললো: هٰذِهِ السُّنَّة অর্থাৎ এই দাড়ি শরীফ হলো সুন্নত, বাবরি সুন্নাত নয়। এ কথা শোনার সাথে সাথে আমীরে আহলে সুন্নাতের খেয়াল সে দিকে গেলো যে, বছরখানেক পূর্বে মসজিদে হারাম শরীফে এমন কিছু লোক এসেছিল যারা বড় চুল রেখেছিল, তারা সেখানে অনেক বেয়াদবি করেছিল, এই বেদনাদায়ক ঘটনায় অনেক হাজী শহীদ হয়েছেন। হতেও তো পারে, এই পুলিশের এটা তো মনে হচ্ছে না যে, আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত। অতঃপর সে তার আরেক সঙ্গী যে তার পাশে ঘুমাচ্ছিলো তাকে পা দ্বারা আঘাত করে জাগিয়ে তুলল। সে উঠতেই বন্দুকটা হাতে নিলো। ফজরের নামাযের সময় ঘনিয়ে আসছে, অযু ইত্যাদির প্রয়োজন, এমন অবস্থায় আশিকে মদীনার মন খুবই অস্থির হয়ে উঠলো যে, জানিনা তারা কি করতে চাইছে, পুলিশরা পাশের একটি ছোট ঘরের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতে বললো, তিনি মনে মনে এই চিন্তায় পড়ে গেলেন যে, আল্লাহ না করুন, যদি আমাকে এখানে ছেড়ে চলে যায় তাহলে আমি কিভাবে অযু করবো, কিভাবে ফজরের নামায আদায় করবো? এই চিন্তায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁর বরকতময় জিহ্বা থেকে তাঁর মায়মান মাতৃভাষায় বেরিয়ে এলো: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কোথায় ফেঁসে গেছি? মদীনার প্রেমিকের মুখ থেকে এই বাক্যটি বের হতে দেরী, হুযুর صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সাহায্য আসতে দেরী হলো না, আর্তনাদ কবুল করা হলো, সেই পুলিশরা একেবারে হাসিমুখে এবং দরজা বন্ধ করতে করতে তাকে যাওয়ার অনুমতি দিলো।
সহীহ-বুখারী শরীফে রয়েছে, প্রিয় নবী, মক্কী মাদানী মুস্তফা صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: اَلْمَدِیْنَۃُ کَالْکِیْرِ تَنْفِیْ خُبُثَہَا وَ یَنْصَحُ طَیِّبَہَا মদীনা চুল্লির মত যা লোহার মরিচা দূর করে এবং উত্তমকে নিখুঁত করে।