Book Name:Karamat e Auliya Ke Saboot
মতবিরোধ (Disagreement) হয়নি। সবারই একই আকীদা যে, সাহাবায়ে কিরাম عَلَیْہِمُ الرِّضْوَان এবং আউলিয়ায়ে কিরাম رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِمْ এর কারামত সত্য, সকল যুগে আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কারামত প্রকাশিত হয়েছে এবং اِنْ شَآءَ الله কিয়ামত পর্যন্ত আউলিয়ায়ে কিরাম رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِمْ আসবেন এবং তাঁদের মাধ্যমে কারামত প্রকাশিত হতে থাকবে।
কারামত কাকে বলে?
কারামত বলতে বোঝানো হয়: ওলীউল্লাহ দ্বারা প্রকাশিত এমন কাজ যা সাধারণত অসম্ভব অর্থাৎ প্রকাশ্য কোন উপকরণের মাধ্যমে ঘটানো সম্ভব নয়। যেমন: মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করে দেয়া, যা সাধারণত সম্ভব (Possible) নয়। যদি কোনো ওলী আল্লাহর অনুগ্রহে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করে দেন, তবে এটিকে কারামত বলা হবে। তদ্রুপ শুধু হাত লাগিয়ে, চোখ দিয়ে দেখে অসুস্থ ব্যক্তিকে আরোগ্য দান করা, অথবা কোনো যন্ত্র (যেমন মোবাইল ইত্যাদি) ছাড়াই দূর থেকে শুনতে পারা, মনের কথা জানা, সাহায্যে পৌঁছে যাওয়া, শত কোটি কিলোমিটার পথ ঘোড়া বা যানবাহন ছাড়া কয়েক মিনিটে অতিক্রম করা ইত্যাদি। এই ধরনের কাজ যদি ওলীউল্লাহ দ্বারা প্রকাশিত হয়, তবে এটিকে কারামত বলা হয়। এই ধরনের কাজ যদি আল্লাহর সত্যিকারের নবীদের দ্বারা প্রকাশিত হয়, তবে তাকে মুজিযা (Miracle) বলা হয়। (শরহু আকায়িদে নাসাফীয়া, ৩১৩ - ৩১৪) আর যদি সাধারণ কোনো মুমিন থেকে এমন কাজ প্রকাশিত হয়, তবে তাকে মাউনাত বলা হয়। (আন নিবরাস, ৪৩০)
কারামত হলো মুজিযার ফয়যান
আল্লামা ইউসুফ বিন ইসমাইল নাবহানী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ বলেন: ওলীর কারামত মূলত নবীর মুজিযাই বটে। কারণ, ওলী থেকে কারামত প্রকাশ হওয়া নবী عَلَیْہِ السَّلَام এর সত্য হওয়ার প্রমাণ যে, যে নবীর عَلَیْہِ السَّلَام অনুসারী এমন মর্যাদা রাখে, তো স্বয়ং সে নবীর মর্যাদা এবং মহত্বের পরিধি কেমন হবে! তিনি আরও লেখেন: যখন একজন ব্যক্তি তার আত্মাকে, তার কুপ্রবৃত্তিকে নির্মূল করে সম্পূর্ণ ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট থাকে, সে শুধু ঐ কাজ করে যাতে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্ট থাকে, যেসব কাজ থেকে আল্লাহ নিষেধ করেছেন সেগুলি এড়িয়ে চলে, অর্থাৎ নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টিতে বিলীন করে দেয়, তখন আল্লাহ তার রহমত ও অনুগ্রহ দ্বারা সেই বান্দার চাহিদা পূর্ণ করেন। (জামে কারামতে আউলিয়া, ১/১৩)
রাসূলের সাহাবীর কারামত
প্রখ্যাত সাহাবীয়ে রাসূল হযরত সালমান ফারসি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ, একদিন মাদাঈন শহর ত্যাগ করলেন এবং তাঁর সঙ্গে একটি অতিথিও ছিল, (পথিমধ্য একটি জঙ্গল দিয়ে অতিক্রম করলেন) জঙ্গলে হরিণ চলছিল এবং পাখিরা আকাশে উড়ছিল, হযরত সালমান ফারসি رَضِیَ اللهُ عَنْہُ চাইলেন যে, অতিথির আতিথেয়তা (Hospitality) করা হোক, অতএব তিনি হরিণ এবং পাখিদের ডাকলেন এবং বললেন: হরিণেরা! পাখিরা! তোমাদের মধ্যে একটি পাখি এবং একটি হরিণ আমার কাছে চলে এসো, আমি আমার অতিথির আতিথেয়তা করতে চাই।