Book Name:Faizan e Ameer e Muawiya
সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি কি হওয়া উচিত? নিঃসন্দেহে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এটাই হওয়া উচিত যে, যাঁর সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم হাদী ও মাহদী হওয়ার দোয়া করেছেন, তিনি নিঃসন্দেহে হাদী এবং মাহাদীও বটে।
আমীর মুয়াবিয়া رَضِیَ اللهُ عَنْہُ দুটি উচ্চ গুণাবলী
একটি দীর্ঘ হাদীসে পাক রয়েছে, যাতে প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সাহাবায়ে কিরামের عَلَیْہِمُ الرِّضْوَان বিশেষ বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। উক্ত হাদীস শরীফে হযরত আমীরে মুয়াবিয়ার رَضِیَ اللهُ عَنْہُ দু'টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বয়ান করতে গিয়ে রাসূলে করীম صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: وَ مُعَاوِیَۃُ بْنُ اَبِی سُفْیَان اَحْلَمُ اُمَّتِی وَ اَجَوَدُهَا আর মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান আমার উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহিষ্ণু এবং সর্বাধিক দানশীল।
(বাগিয়াতুল বাহিস, ১/৮৯৩, হাদীস ৯৬৫)
হে আশিকানে রাসূল! এটিও অত্যন্ত ঈমান উদ্দীপক হাদীসে পাক! প্রিয় নবী صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم দৃশ্যত হযরত আমীরে মুয়াবিয়া رَضِیَ اللهُ عَنْہُ এর শুধুমাত্র দু'টি গুণাবলীর কথা উল্লেখ ইরশাদ করেছেন, কিন্তু বাস্তবে এটি শুধু দু'টি গুণাবলী নয়, বরং আমীরে মুয়াবিয়া رَضِیَ اللهُ عَنْہُ এর গুণাবলীর সম্পূর্ণ গ্রন্থ। ওলামায়ে কিরাম বলেন: আমীর মুয়াবিয়া رَضِیَ اللهُ عَنْہُ এর এ দু'টি গুণাবলী সম্পর্কে চিন্তাভাবনা কর! সহিষ্ণুতা ও দানশীলতা এ দুটো এমন গুণাবলী যে, যার মধ্যে এসব গুণাবলী পাওয়া যায়, সে সকল আভ্যন্তরীণ রোগ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।
আল্লামা ইবনে হাজর হায়তামী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ বলেন: যেই বান্দার অন্তরে সামান্যতম অহংকার থাকে সে মোটেও সহিষ্ণু হতে পারে না (অর্থাৎ যার মধ্যে সামান্যতম অহংকার থাকে তার পক্ষে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন আর যে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সে সহিষ্ণু নয়। অতএব যে ব্যক্তি অহংকার থেকে সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ থাকে) এবং ক্রোধের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায়, তখন সে সমস্ত অভ্যন্তরীণ মন্দ থেকে রক্ষা পায় এবং যে ব্যক্তি অভ্যন্তরীণ মন্দগুলি থেকে বিরত থাকে, সে সর্বপ্রকার কল্যাণ অর্জন করতে সক্ষম হয়।
একই ভাবে দানশীলতা (অর্থাৎ অনেক বেশি দানশীলতা) সম্পর্কে চিন্তা করুন! প্রিয় নবী, মক্কী মাদানী মুস্তাফা صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: حُبُّ الدُّنْیَا رَاْسُ کُلٍّ خَطِیْئَۃٍ দুনিয়ার ভালোবাসাই সকল অনিষ্টের মূল। জানা গেল; আল্লাহ পাক যে বান্দাকে পার্থিব মোহ থেকে রক্ষা করেন এবং তাঁকে দানশীলতার নেয়ামত দ্বারা ধন্য করেন, এটি এই বিষয়ের নিদর্শন যে, ঐ বান্দার অন্তরে বিন্দুমাত্র হিংসা নেই এবং বান্দা নশ্বর জগতের অন্বেষণ করে না, বরং বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কল্যাণের প্রতি মনোযোগ দেয়। (ফাযাইলে মুয়াবিয়া, পৃষ্ঠা ৭৩-৭৪)