ব্যক্তির ঘরের দেওয়াল ও ছাদ আমাদের ঘরের সাথে সংযুক্ত থাকে কিন্তু দরজা দূরে থাকে আর অন্যজনের ঘরের দরজা ও ছাদ আমাদের ঘরের সাথে সংযুক্ত নয় কিন্তু দরজা নিকটে থাকে তাহলে বেশি নিকটতম এই দ্বিতীয় প্রতিবেশীকেই গণ্য করা হবে আর এর কারণও স্পষ্ট যে, দরজা নিকট হওয়ার কারণে সেই প্রতিবেশীর সাথে সাক্ষাত বেশি হয়, এই জন্য তার সাথে মেলা-মিশা বেশিই হয়ে থাকে এবং একে অপরের সুখে দুঃখে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ বেশি থাকে। মুফতি সাহেব رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ আরো বলেন: হাদীসে পাকের অর্থ এটা নয় যে, দূরের প্রতিবেশীকে একেবারে সঙ্গ দিবে না উদ্দেশ্য হলো; সবাইকে সঙ্গ দিবে কিন্তু নিকটতমকে বেশি প্রাধান্য দিবে..! (মিরআতুল মানাজিহ, ৩ খন্ড, ১২১ পৃষ্ঠা) মোট কথা: এই হাদীসে পাক থেকে বুঝা গেলো, যার দরজা আমাদের দরজার নিকট সেই নিকটতম প্রতিবেশী আর যার দরজা দূরে সেই দূরের প্রতিবেশী  এবং আল্লাহ পাক আমাদের এ উভয় প্রকারের প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

৪০ ঘর প্রতিবেশীর অন্তর্ভূক্ত

    হাদীসে পাকে রয়েছে: একবার হুযুর পাক صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم কোন এক সাহাবীকে رَضِیَ اللهُ عَنْہُ নির্দেশ দিলেন যে, মসজিদের দরজার গিয়ে এই ঘোষাণা করে দাও: হে লোকেরা! শোনে নাও, চল্লিশটি ঘর প্রতিবেশীর অন্তর্ভূক্ত। (আল মাকাসিদুল হাসান ২০০ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩৫৯)

    হযরত ইমাম যুহরী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ বলেন: ৪০টি ঘর ডানে, ৪০টি ঘর বামে, ৪০টি ঘর পেছনে, এভাবে নবী করীম صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم চতুর্দিকে ইশারা করলেন। (ইহ্য়াউল উলুমউদ্দীন, ২/২৬৫)

পরিপূর্ণ ঈমানের জন্য জরুরী আমল

    হে আশিকানে রাসূল! ইসলামে প্রতিবেশীকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, এমনকি ঐসব আমল, যেগুলোর মাধ্যমে ঈমান পরিপূর্ণ হয়, তার মধ্যে প্রতিবেশীর সাথে উত্তম আচরণও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে অর্থাৎ আমরা ঐ সময় পর্যন্ত পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবো না, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিবেশীর হক আদায় করবো না। হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ رَضِیَ اللهُ عَنْہُ হতে বর্ণিত, আল্লাহ পাকের সর্বশেষ নবী হুযুর صَلَّی اللهُ عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم বলেন: لَا یُؤْمِنُ عَبْدٌ لَا یَاْمَنُ جَارُہٗ بَوَائِقَہٗ ঐ বান্দা (পরিপূর্ণ) মুমিন নয়, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্টতা থেকে নিরাপদ নয়। (মুসনদে বযযার, ১৬/২১৫, হাদীস: ৯৩৬২)